উদ্যান জাতীয় ফসল

Monday, January 25, 2016

সরগম



@পরিচিতি@
বাংলা নামঃ সরগম
ইংরেজী নামঃ Sorghum
বৈজ্ঞানিক নামঃ Sorghum helepense (Linn.) Pers.
পরিবারঃ Sonneratiaceae
সরগম একটি বড় দানার মিলেট ফসল। ইহা যোয়ার, বাজরা, দুবলাই ধান ইত্যাদি নামেও পরিচিত। বাংলাদেশে প্রধানত সরগম খৈ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া গমের মত আটা করে রুটি তৈরী করা যায়। সরগম ছাতু হিসাবেও ব্যবহার করা যায়।
@জলবায়ু@
সরগম মূলত একটি উষ্ণ জলবায়ু এবং খরা সহিষ্ণু ফসল। অন্য দিকে যে এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত এমনকি জলাবদ্ধও হয় সেখানেও এটা চাষ করা সম্ভব। স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য ৩০০ সেঃ তাপমাত্রার উত্তম। বিষুব রেখার ৪০০ উত্তর দক্ষিন পর্যন- এর চাষ করা সম্ভব।
@জমি মাটি@
@জমি মাটি নির্বাচনঃ@
সরগম ভারী অনুর্ববর থেকে উর্বর, সুনিষ্কাশিত থেকে জলাবদ্ধ সব রকমের মাটিতেই জন্মানো সম্ভব। ইহা ভারী থেকে হালকা বেলে বুনটের মাটিতে ভাল জন্মে। মাটির অম্লমান .-. উত্তম
@জমি তৈরীঃ@
- টি গভীরভাবে আড়াআড়ি চাষ মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে সমতল করে জমি তৈরী করতে হয়।
@জাত@
জাতঃ
সরগমকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে শ্রেনীকরণ করা যায়। যেমন-
১। শীষের আঁটসাটঁ প্রকৃতির ভিত্তিতে
) আঁটসাঁট শীষ বিশিষ্ট- রবি মৌসুমে চাষ উপযোগী।
) ছড়ানো বা ঢিলা শীষ বিশিষ্ট- রবি খারিপ উভয় মৌসুমেই চাষ উপযোগী
২। বীজের বর্ণ ভিত্তিতে
) সাদা ) হলদে ) লাল ) বাদামী ) মিশ্র বর্ণের
৩। উচ্চতা হিসাবে
) লম্বা (- মিটার)
) বেঁটে (.-. মিটার)
বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনষ্টিটিউট ফলন গাছের উচ্চতা পরীক্ষা করে কয়েক প্রকারের সরগম অধিকতর ভাল বলে মতামত দিয়েছে। এদের ফলন .-. টন/হেক্টর। এদের মধ্যে ভি- , ভি- ২৩, -এক্স- জাতগুলো রবি মৌসুমে ভাল ফলন দেয়। এদরে জীবন কাল ৮০-৯০ এবং ১০০-১২০ দিন।
@বীজের হার বপন পদ্ধতি@
বীজহার, বপনকাল বপন পদ্ধতিঃ
ছিটানো সারি উভয় পদ্ধতিতে বপন করা যায়। ছিটানো পদ্ধতিতে শেষ চাষের সময়বপন করে মই দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। অন্য দিকে সারি পদ্ধতিতে ৪৫ সে.মি. দুরত্বে সারি করে সারিতে ছিটিয়ে বীজ বপন করতে হয়। আর্দ্র জমিতে বপনের গভীরতা - সে.মি. এবং কম আর্দ্র জমিতে - সে.মি. উদ্দেশ্য অনুযায়ী সারির দুরত্ব, গাছের দুরত্ব বীজহার নিম্নে দেয়া হলো
@উদ্দেশ্য সারির দুরত্ব (সে.মি.) গাছের দুরত্ব (সে.মি.) বীজহার(কেজি/হেঃ)@
দানা ৪০-৫০ ২০-৩০ ১২-১৫
গো- খাদ্য ২০-২৫ ১০-১৫ ৪৮-৬০
@সারের মাত্রা প্রয়োগ পদ্ধতি@
সারের মাত্রা প্রয়োগঃ
উচ্চ ফলনশীল জাত অনুকুল মৌসুমে আবাদ করলে ব্যপক পরিমান খাদ্য উপাদান পরিশোষন করে। সরগমের জমিতে ব্যবহৃত সারের পরিমান নিম্নে দেয়া হলো
সারের নাম চাষের উদ্দেশ্য
বীজ (কেজি) গো-খাদ্য (কেজি)
ইউরিয়া ১১০-১২০ ১২০-১৩০
টিএসপি ১১০-১২০ ১০০-১১০
এমওপি ১১০-১২০ ১১০-১২০
সম্পূর্ন টিএসপি এমওপি এবং এক তৃতীয়াংশ ইউরিয়া জমি তৈরীর শেষ চাষের পূর্বে প্রয়োগ করতে হয়। বাকি ইউরিয়া সমান ভাগে ভাগ করে বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিন ৫০-৭০ দিন পরে প্রয়োগ করতে হয়।
@পরিচর্যা@
আগাছা দমন পাতলাকরণঃ
সরগমের জমিতে বিশেষ প্রক্রিয়ায় আগাছা দমন করা হয়। জমিতে - বার হালকাভাবে কোদাল দিয়ে মাটি আলোড়ন করা হয়। এতেই আগাছা দমন হয়। চারা গাছ ১০-১৫ সে.মি. উঁচু হলেই পাতল করে দিতে হয়। প্রক্রিয়া শুধু বীজ পাওয়ার উদ্দেশ্যে আবাদ হলেই করা হয়
সেচ নিকাশঃ
সরগম ফসলে সেচ নিকাশে তেমন কোন যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ইহা খরা জলাবদ্ধতা উভয় অবস্থাই সহ্য করতে পারে।
@রোগ বালাই@
সরগম ফসল সহযে রোগ-বালাই দ্বারা আক্রান- হয় না। তবে বেশী পরিমানে আক্রান- হলে অনুমোদিত কীট বালাইনাশক নির্দিষ্ট পরিমানে সেপ্র করতে হবে।
@ফসল সংগ্রহ@
চাষের উদ্দেশ্য অনুযায়ী ফসল সংগ্রহের সময়কাল বিভিন্ন। পশুখাদ্য হিসাবে চাষ করলে ফুল আসার আগে কেটে নিতে হবে। আর বীজের জন্য চাষ করলে ৭৫% এর বেশী বীজ পেকে গেলেই সংগ্রহ করতে হবে। গাছের আগার দিক থেকে কেটে এনে মাড়াই করে রোদে শুকিয়ে গুদামজাত করা হয়

No comments:

Post a Comment