উদ্যান জাতীয় ফসল

Tuesday, January 26, 2016

শিমুল



@@পরিচিতি@@
বাংলা নামঃ শিমুল
ইংরেজি নামঃ Red Silk Cotton Tree.
বৈজ্ঞানিক নামঃ Salmalia malabarica Schott.
syn. Bombax ceiba
পরিবারঃ Bombacaceae.
শিমুল একটি পাতাঝরা বড় বৃক্ষ, ১৫-২০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। শাখা-প্রশাখা কম, সরল এবং বৃত্তাকারে চারিদিকে বিস্তৃত। বড় গাছের অধিমূল (Buttress) হয়। গাছের গায়ে বহু কাঁটা হয়। এগুলোর অগ্রভাগ সরু তীক্ষ্ণ এবং গোড়াটা বেশ মোটা। শিমুলের পাতার গঠন এমন যেন একটি লম্বা বোঁটায় ছড়ানো হাতের পাঞ্জা। পলাশের মতো শিমুলেরও শীতের শেষে পাতা ঝরে যায়। ফাল্গুন মাসে ফুলের কুঁড়ি আসে এবং চৈত্র মাসে বড় উজ্জ্বল লাল রঙের ফুল ফোটে। তখন মনে হয় যেন গাছে আগুন লেগেছে। ফুলের বৃতি মোটা মখমলের ন্যায় নরম। ফুল এক ধরণের স্বাদু তরল পদার্থ সঞ্চিত থাকে, তাই পাখির পিপাসা মেটাবার জন্য শিমুল গাছে ভিড় করে। তারপর মোচোকৃতি ফল হয় যা পাকে এপ্রিল মাসে। ফলগুলি গাছ থেকে ভেঙে না নিলে আপনাআপনি ফেটে গিয়ে তুলা বীজ বেরিয়ে যায়
বাংলাদেশে প্রায় সর্বত্র শিমুল গাছ দেখা যায়। বেলে দো-আঁশ বা নতুন মাটিতে গাছ ভালো জন্মে।
@@বীজ সংগ্রহ চারা উত্তোলন@@
@বীজ সংগ্রহ চার উত্তোলন@
পাকা ফল গাছ থেকে সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে তুলা থেকে বীজ আলাদা করে নার্সারী বেডে বীজ বপন করতে হয়। বীজ ফিকে কৃষ্ণবর্ণ, একটি ফলে অনেক বীজ থাকে। বীজের অঙ্কুরোদগম হার শতকরা ৭৫ ভাগ এবং তা ১৫-২০ দিনে গজায়। তবে বীজ শুকানো পাত্রে থেকে ১২ মাস সংরক্ষণ করা যায়
@বীজ সংগ্রহের সময়@
এপ্রিল (বৈশাখ) মাস বীজ সংগ্রহের জন্য ভাল সময়
@বীজের ওজন@
প্রতি কেজিতে ২১৫০০-৩৮৫০০টি বীজ হয়ে থাকে।
@ঔষধি গুণ@
শিমুল সাধারণত কাজ করে রক্তনালীতে মুত্রনালীতে কাজ করে।
১। যৌবনে শুক্রাল্পতায় /১০ গ্রাম কচি শিমুল মূল একটু চিনি দিয়ে দুই বেলা খেলে অসুবিধা সেরে যাবে।
২। প্রৌঢ়ে যৌন সংসর্গে অপ্রতিভ হলে কচি শিমুল মূল চাকা করে কেটে শুকিয়ে গুঁড়া করে দুই গ্রাম আন্দাজ গুঁড়া এক কাপ গরম দুধে মিশিয়ে খেতে হবে। তা হলে অসুবিধা দূর হবে। ( Ghani, 2003)
৩। হঠাৎ শ্লেষ্মা রক্তযুক্ত আমাশয় দেখা দিলে এক থেকে দেড় গ্রাম শিমুল মোচরসের (শিমুল গাছের গুঁড়ি থেকে এক রকম নির্যাস (আঠা) বের হয়, সেটিই মোচরস। এটি শুকিয়ে বাজারে বিক্রি হয়।) গুঁড়া ছাগলের দুধ বা পানিসহ দুবেলা খেলে / দিনের মধ্যেই রক্ত পড়া তো বন্ধ হবেই, আমাশয়ও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।
৪। পানি খেলেও পিপাসা যাচ্ছে না, এমন হলে / গ্রাম পাতার ডাঁটা একটু থোঁতো করে এক গ্রাম পানিতে একটু ভিজিয়ে রেখে চটকে সেটাকে ছেঁকে / বার খেলে পিপাসার টান কমে যাবে।
৫।লোম ফোড়ায় শিমুল ছাল বেটে জায়গায় প্রলেপ দিলে / দিনের মধ্যে জ্বালাও যাবে আর ফোড়াও সেরে যাবে।
এছাড়াও ক্রনিক কাশি, মহিলাদের প্রদর রোগে, অর্শ, গনোরিয়া, শিশুদের দাস্ত পরিষ্কার না হলে ইত্যাদি রোগ নিরাময়ে আধুনিক আয়ুর্বেদ স্বাস্ত্রে শিমুল ব্যবহৃত হয়

No comments:

Post a Comment