আম
@ পরিচিতি @
বাংলা নামঃ আম
ইংরেজী নামঃ Mango
বৈজ্ঞানিক নামঃ Mangifera indica
পরিবারঃ Anacardiaceae
বাংলা নামঃ আম
ইংরেজী নামঃ Mango
বৈজ্ঞানিক নামঃ Mangifera indica
পরিবারঃ Anacardiaceae
আম
বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় এবং
উপাদেয়
ফল।
তাই
আমকে
ফলের
রাজা
বলা
হয়।
বাংদেশের প্রায়
সব
জেলাতেই আম
জন্মে
তবে
উৎকৃষ্টমানের আম
প্রধানত: উত্তর
পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলেতে যেমন
চাপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর,
ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, বংপুর,
কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও
যশোর
জেলাতে
ভাল
জন্মে।
দেশে
বর্তমানে প্রায়
৫০
হাজার
হেক্টর
জমিতে
১
লক্ষ
৯০
হাজার
মেঃ
টন
আম
উৎপন্ন
হয়
যা
আমাদের
প্রয়োজনের মাত্র
১/৫ পূরণ হয়ে
থাকে।
আমে
প্রচুর
পরিমাণে ভিটামিন ’এ’
থাকে।
আম
থেকে
চাটনি,
আচার,
জেলী,
মোরব্বা, আমসত্ব,
জুস
প্রভৃতি তৈরী
করা
যায়।
@ জলবায়ু ও
মাটি
@
আম প্রধানত উষ্ণ মন্ডলের ফল। তবে এর বিস্তৃতি অব উষ্ণ মন্ডল পর্যন্ত। ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা আম চাষের জন্য উপযুক্ত। আম গাছ যে কোন প্রকার মাটিতে জন্মে তবে গভীর, সুনিষ্কাশিত উর্বর দোঁ-আশ মাটি আম চাষের জন্য উপযুক্ত
আম প্রধানত উষ্ণ মন্ডলের ফল। তবে এর বিস্তৃতি অব উষ্ণ মন্ডল পর্যন্ত। ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা আম চাষের জন্য উপযুক্ত। আম গাছ যে কোন প্রকার মাটিতে জন্মে তবে গভীর, সুনিষ্কাশিত উর্বর দোঁ-আশ মাটি আম চাষের জন্য উপযুক্ত
@ জাত @
আম পাকার সময় অনুসারে আমের জাত সমুহকে আগাম, মাঝ মৌসুমী এবং নাবি এ তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।
আম পাকার সময় অনুসারে আমের জাত সমুহকে আগাম, মাঝ মৌসুমী এবং নাবি এ তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।
আগাম
জাতঃ
যে
সব
জাত
মধ্য
মে
– মধ্য
জুন
মাসের
মধ্যে
পাকে
সেগুলো
আগাম
জাতের
অর্ন্তভূক্ত। যেমন-
বারি
আম-১ (মহানন্দা), গোপালভোগ, খিরসাপাতি, বৃন্দাবনী ইত্যাদি।
মাঝ
মৌসুমী
জাতঃ
যে
সব
জাত
মধ্য
জুন
– জুন
মাসের
মধ্যে
পাকে
সেগুলো
মাঝ
মৌসুমী
জাতের
অর্ন্তভূক্ত। যেমন-
বারি
আম-২ (লক্ষনভোগ), বারি
আম-৩ (আম্রপালি), বাউ
আম
– ২
(সিন্দুরী), বাউ
আম
– ৩
(ডায়াবেটিক), ল্যাংড়া, সূর্যপুরী, হিমসাগর, কিষাণভোজ এবং
কোহিতুর অন্যতম।
নাবী জাতঃ যে সকল জাত জুলাই মাস হতে পাকে সেগুলোকে নাবী জাত বলে। নাবী জাতের মধ্যে বারি আম-৪, বাউ আম -১ (নিলাম্বরী), বাউ আম – ৫ (পলিএ্যাম্বায়নী), ফজলী, আশ্বিনা, কুয়াপাহাড়ী এবং মোহনভোগ অন্যতম।
নাবী জাতঃ যে সকল জাত জুলাই মাস হতে পাকে সেগুলোকে নাবী জাত বলে। নাবী জাতের মধ্যে বারি আম-৪, বাউ আম -১ (নিলাম্বরী), বাউ আম – ৫ (পলিএ্যাম্বায়নী), ফজলী, আশ্বিনা, কুয়াপাহাড়ী এবং মোহনভোগ অন্যতম।
@ বংশ বিস্তার @
আম গাছের বংশ বিস্তারে প্রধানতঃ জোড় কলম পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে ক্লেফ্ট ও ভিনিয়ার গ্রাফটিং পদ্ধতি বহুল ভাবে প্রচলিত। এ জন্য রোগমুক্ত ও পাকা আম হতে ষ্টক চারা তৈরী করে নিয়ে তার উপর কাঙ্খিত জাতের ডগা বা সায়ন জোড়া দিয়ে এ কলম করা হয়। সাধারণত মে, জুন এবং জুলাই মাস আমের জোড় কলমের জন্য উপযুক্ত সময়। তবে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এ সময়ের কিছুটা তারতম্য হতে পারে। পরীক্ষায় প্রমানিত হয়েছে যে, বামন জাতের আদি জোড়ের উপর বামন জাতের সায়ন জোড়া লাগালে উৎপন্ন কলমটিতে প্রকৃত বামন চরিত্র প্রকাশ পায়।
আম গাছের বংশ বিস্তারে প্রধানতঃ জোড় কলম পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে ক্লেফ্ট ও ভিনিয়ার গ্রাফটিং পদ্ধতি বহুল ভাবে প্রচলিত। এ জন্য রোগমুক্ত ও পাকা আম হতে ষ্টক চারা তৈরী করে নিয়ে তার উপর কাঙ্খিত জাতের ডগা বা সায়ন জোড়া দিয়ে এ কলম করা হয়। সাধারণত মে, জুন এবং জুলাই মাস আমের জোড় কলমের জন্য উপযুক্ত সময়। তবে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এ সময়ের কিছুটা তারতম্য হতে পারে। পরীক্ষায় প্রমানিত হয়েছে যে, বামন জাতের আদি জোড়ের উপর বামন জাতের সায়ন জোড়া লাগালে উৎপন্ন কলমটিতে প্রকৃত বামন চরিত্র প্রকাশ পায়।
@ জমি নির্বাচন ও
তৈরী
@
আম বাগানের জন্য সেচ- নিষ্কাশন সুবিধা যুক্ত, রৌদ্রময় স্থানে উঁচু থেকে মাঝারী উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচিত জমিটিকে ভালভাবে চাষ মই দিয়ে আগাছা মুক্ত ও সমতল করে তৈরী করতে হবে। আম গাছ প্রধানত বর্গাকার পদ্ধতিতে রোপণ করা হয়। তবে ষঢ়ভূজী বা হেক্সাগোণাল পদ্ধতিতে রোপণ করা গেলে সমপরিমান জমিতে ১৫% গাছ বেশী রোপণ করা যায়।
আম বাগানের জন্য সেচ- নিষ্কাশন সুবিধা যুক্ত, রৌদ্রময় স্থানে উঁচু থেকে মাঝারী উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচিত জমিটিকে ভালভাবে চাষ মই দিয়ে আগাছা মুক্ত ও সমতল করে তৈরী করতে হবে। আম গাছ প্রধানত বর্গাকার পদ্ধতিতে রোপণ করা হয়। তবে ষঢ়ভূজী বা হেক্সাগোণাল পদ্ধতিতে রোপণ করা গেলে সমপরিমান জমিতে ১৫% গাছ বেশী রোপণ করা যায়।
@ চারা রোপণের
সময়
@
জ্যৈষ্ঠ – আষাঢ় মাস এবং ভাদ্র – আশ্বিন মাস চারা রোপণের উপযুক্ত সময়
জ্যৈষ্ঠ – আষাঢ় মাস এবং ভাদ্র – আশ্বিন মাস চারা রোপণের উপযুক্ত সময়
@ রোপণ দুবত্ব
@
বড় আকৃতির জাতের জন্য ৮ -১০ মিটার এবং বামন আকৃতির জাতের জন্য ৫ মিটার দুরুত্ব দেয়া উত্তম।
বড় আকৃতির জাতের জন্য ৮ -১০ মিটার এবং বামন আকৃতির জাতের জন্য ৫ মিটার দুরুত্ব দেয়া উত্তম।
@ মাদা তৈরী
ও
সার
প্রয়োগ
@
মাদা ১মি x ১মি x ১মি আকারে তৈরী করতে হবে। প্রতি মাদায় ১৮-২২ কেজি জৈব সার, ১০০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৪৫০-৫৫০ গ্রাম টিএসপি, ২০০-৩০০ গ্রাম এমওপি, ২০০-৩০০ গ্রাম জিপসাম এবং ৪০-৬০ গ্রাম জিংক সালফেট সার মিশিয়ে তৈরী করতে হবে।
মাদা ১মি x ১মি x ১মি আকারে তৈরী করতে হবে। প্রতি মাদায় ১৮-২২ কেজি জৈব সার, ১০০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৪৫০-৫৫০ গ্রাম টিএসপি, ২০০-৩০০ গ্রাম এমওপি, ২০০-৩০০ গ্রাম জিপসাম এবং ৪০-৬০ গ্রাম জিংক সালফেট সার মিশিয়ে তৈরী করতে হবে।
@ চারা রোপণ
@
মাদা তৈরীর ১০-১৫ দিন পর মাদার ঠিক মাঝখানে চারাটি রোপণ করতে হবে। চারা রোপণের পর পানি, খুঁটি ও বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
মাদা তৈরীর ১০-১৫ দিন পর মাদার ঠিক মাঝখানে চারাটি রোপণ করতে হবে। চারা রোপণের পর পানি, খুঁটি ও বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
@ উপরিসার প্রয়োগ
@
গাছের বয়স অনুযায়ী নির্ধারিত মাত্রার সারকে সমান দুই বারে গাছে প্রয়োগ করা হয়। ১ম বার জৈষ্ঠ্য- আষাঢ় মাস এবং ২য় বার আশ্বিন মাসে প্রয়োগ করতে হবে। বয়স অনুযায়ী গাছের গোড়া থেকে ৩-৪ ফুট বাদ দিয়ে দুপুরের রোদের সময় যতটুকু জায়গায় গাছের ছায়া পড়ে ঠিক ততটুকু এলাকাতে সার ছিটিয়ে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। মাটি কোপানোর সময় হাতের কনুই গাছের দিকে দিয়ে কোপালে গাছের শিকড় কম কাটা যাবে। গাছের বয়স অনুযায়ী বাৎসরিক সারের মাত্রা নিম্নের ছকে দেয়া হলো।
গাছের বয়স অনুযায়ী নির্ধারিত মাত্রার সারকে সমান দুই বারে গাছে প্রয়োগ করা হয়। ১ম বার জৈষ্ঠ্য- আষাঢ় মাস এবং ২য় বার আশ্বিন মাসে প্রয়োগ করতে হবে। বয়স অনুযায়ী গাছের গোড়া থেকে ৩-৪ ফুট বাদ দিয়ে দুপুরের রোদের সময় যতটুকু জায়গায় গাছের ছায়া পড়ে ঠিক ততটুকু এলাকাতে সার ছিটিয়ে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। মাটি কোপানোর সময় হাতের কনুই গাছের দিকে দিয়ে কোপালে গাছের শিকড় কম কাটা যাবে। গাছের বয়স অনুযায়ী বাৎসরিক সারের মাত্রা নিম্নের ছকে দেয়া হলো।
সারের
নাম
গাছের
বয়স
০২-০৪ বৎসর ০৫-০৭বৎসর ০৮-১০ বৎসর ১১-১৫ বৎসর ১৬-২০ বৎসর ২০ বৎসরের উর্ধ্বে
গোবর বা আবর্জনা পঁচা সার (কেজি) ১০-১৫ ১৬-২০ ২১-২৫ ২৬-৩০ ৩১-৪০ ৪১-৫০
ইউরিয় (গ্রাম) ২৫০ ৫০০ ৭৫০ ১০০০ ১৫০০ ২০০০
টিএসপি (গ্রাম) ২৫০ ২৫০ ৫০০ ৫০০ ৭৫০ ১০০০
এমওপি (গ্রাম) ১০০ ২০০ ২৫০ ৩৫০ ৪৫০ ৫০০
জিপসাম (গ্রাম) ১০০ ২০০ ২৫০ ৩৫০ ৪০০ ৫০০
জিংক সালফেট(গ্রাম) ১০ ১০ ১৫ ১৫ ২০ ২৫
০২-০৪ বৎসর ০৫-০৭বৎসর ০৮-১০ বৎসর ১১-১৫ বৎসর ১৬-২০ বৎসর ২০ বৎসরের উর্ধ্বে
গোবর বা আবর্জনা পঁচা সার (কেজি) ১০-১৫ ১৬-২০ ২১-২৫ ২৬-৩০ ৩১-৪০ ৪১-৫০
ইউরিয় (গ্রাম) ২৫০ ৫০০ ৭৫০ ১০০০ ১৫০০ ২০০০
টিএসপি (গ্রাম) ২৫০ ২৫০ ৫০০ ৫০০ ৭৫০ ১০০০
এমওপি (গ্রাম) ১০০ ২০০ ২৫০ ৩৫০ ৪৫০ ৫০০
জিপসাম (গ্রাম) ১০০ ২০০ ২৫০ ৩৫০ ৪০০ ৫০০
জিংক সালফেট(গ্রাম) ১০ ১০ ১৫ ১৫ ২০ ২৫
@ সেচ প্রয়োগ
@
চারা গাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য ঘন ঘন সেচ দিতে হবে। ফলন্ত গাছের বেলায় মুকুল ফোটার শেষ পর্যায়ে ১ বার এবং আম যখন মটর দানার আকৃতি ধারন তখন একবার সেচ দিতে হবে। রিং / বেসিন পদ্ধতি আম গাছে সেচ প্রদানের জন্য উত্তম।
চারা গাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য ঘন ঘন সেচ দিতে হবে। ফলন্ত গাছের বেলায় মুকুল ফোটার শেষ পর্যায়ে ১ বার এবং আম যখন মটর দানার আকৃতি ধারন তখন একবার সেচ দিতে হবে। রিং / বেসিন পদ্ধতি আম গাছে সেচ প্রদানের জন্য উত্তম।
@ ডাল ছাঁটাইকরন @
গাছের প্রধান কান্ডটি যাতে সোজাসুজি ১ থেকে ১.৫ মিটার হয় সেদিকে লক্ষ রেখে গাছের গোড়ার সকল ডাল ছেঁটে দিতে হবে।
গাছের মুকুল ভাঙ্গন
গাছের প্রধান কান্ডটি যাতে সোজাসুজি ১ থেকে ১.৫ মিটার হয় সেদিকে লক্ষ রেখে গাছের গোড়ার সকল ডাল ছেঁটে দিতে হবে।
গাছের মুকুল ভাঙ্গন
গাছ
রোপনের
পর
গাছের
বয়স
চার
বছর
না
হওয়া
পর্যন্ত গাছের
মুকুল
ভেঙ্গে
দিতে
হবে।
তা
নাহলে
গাছটি
দুর্বল
হয়ে
যাবে।
@ ফল সংগ্রহ
@
আমের বোটার দিকে হলুদাভ বং ধারন করলে বা গাছ হতে ২-১টি আধাপাকা আম পড়া আরম্ভ করলে আম গাছ হতে সংগ্রহ করতে হবে। আম গাছ হতে ঝাকি দিয়ে না পেড়ে জালিযুক্ত বাঁশের কোটার সাহায্যে আম সংগ্রহ করা উত্তম। আম সংগ্রহের পর বোটাটি নিচের দিকে রাখলে বোটার কশ আমের গায়ে লাগবেনা। বোটার কশ গায়ে লাগলে আমের উপরিভাগ আঠালো হয়ে যায় এবং পাকা আমের উপর তেল ছিটছিটে এবং বাজার মূল্য হ্রাস পায়
আমের বোটার দিকে হলুদাভ বং ধারন করলে বা গাছ হতে ২-১টি আধাপাকা আম পড়া আরম্ভ করলে আম গাছ হতে সংগ্রহ করতে হবে। আম গাছ হতে ঝাকি দিয়ে না পেড়ে জালিযুক্ত বাঁশের কোটার সাহায্যে আম সংগ্রহ করা উত্তম। আম সংগ্রহের পর বোটাটি নিচের দিকে রাখলে বোটার কশ আমের গায়ে লাগবেনা। বোটার কশ গায়ে লাগলে আমের উপরিভাগ আঠালো হয়ে যায় এবং পাকা আমের উপর তেল ছিটছিটে এবং বাজার মূল্য হ্রাস পায়
@ রোগবালাই দমন
@
আমের অ্যানথ্রাকনোজ রোগঃ
অ্যানথ্রাকনোজ রোগের আক্রমণে গাছের পাতা, কান্ড, মুকুল ও ফলে ধুসর বাদামী রংয়ের দাগ পড়ে। এ রোগে আক্রান্ত মুকুল ঝড়ে যায়, আমের গায়ে কালচে দাগ হয় এবং আম পঁচে যায়।
আমের অ্যানথ্রাকনোজ রোগঃ
অ্যানথ্রাকনোজ রোগের আক্রমণে গাছের পাতা, কান্ড, মুকুল ও ফলে ধুসর বাদামী রংয়ের দাগ পড়ে। এ রোগে আক্রান্ত মুকুল ঝড়ে যায়, আমের গায়ে কালচে দাগ হয় এবং আম পঁচে যায়।
প্রতিকারঃ
গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি.লি. টিল্ট -২৫০ ইসি মিশিয়ে অথবা ডাইথেন এম-৪৫, ২ গ্রাম প্রতিলিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের আকার মটর দানার মত হলে ২য় বার স্প্রে করতে হবে।
গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি.লি. টিল্ট -২৫০ ইসি মিশিয়ে অথবা ডাইথেন এম-৪৫, ২ গ্রাম প্রতিলিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের আকার মটর দানার মত হলে ২য় বার স্প্রে করতে হবে।
সুটি
মোল্ডঃ
স্যটি মোল্ড রোগের আক্রমণে গাছের পাতা ও আমের উপর কালো/ছাই রংয়ের আবরণ পড়ে। গাছের মুকুল ঝড়ে যায়। এবং ফলন কমে যায়।
স্যটি মোল্ড রোগের আক্রমণে গাছের পাতা ও আমের উপর কালো/ছাই রংয়ের আবরণ পড়ে। গাছের মুকুল ঝড়ে যায়। এবং ফলন কমে যায়।
প্রতিকারঃ
থিওভিট-৮০ ডব্লিউ পি প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ – ৩ বার স্প্রে করলে এ রোগ দমন করা যায়।
থিওভিট-৮০ ডব্লিউ পি প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ – ৩ বার স্প্রে করলে এ রোগ দমন করা যায়।
আমের
পাউডারী মিলডিউ
রোগঃ
এ রোগের আক্রমণে আমের মুকুলে সাদা পাউডারের মত আবরণ দেখা দেয়। মুকুল ঝড়ে যায়। আক্রান্ত আমের চামড়া খস খসে হয় এবং ফল কুচকে যায়।
এ রোগের আক্রমণে আমের মুকুলে সাদা পাউডারের মত আবরণ দেখা দেয়। মুকুল ঝড়ে যায়। আক্রান্ত আমের চামড়া খস খসে হয় এবং ফল কুচকে যায়।
প্রতিকারঃ
থিওভিট-৮০ ডব্লিউ পি প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে অথবা প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি.লি. টিল্ট -২৫০ ইসি মিশিয়ে ফুল ফোটার আগে ১ বার এবং আম মটর দানার মত হলে ২য় বার স্প্রে করলে এ রোগ দমন করা যায়।
থিওভিট-৮০ ডব্লিউ পি প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে অথবা প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি.লি. টিল্ট -২৫০ ইসি মিশিয়ে ফুল ফোটার আগে ১ বার এবং আম মটর দানার মত হলে ২য় বার স্প্রে করলে এ রোগ দমন করা যায়।
ম্যালফরমেশনঃ
এ রোগ গাছের মুকুল ও ডালে দেখা যায়। ডালে হলে একে বলে অংগজ ম্যালফরমেশন এবং ফুলে হলে বলা হয় ফ্লোরাল ম্যালফরমেশন । আক্রান্ত ডালের বৃদ্ধি কমে যায় এবং আক্রান্ত মুকুলে ফল ধারণ করে না।
প্রতিকারঃ
১) কান্ডের অঙ্গজ ম্যালফরমেশন পরিস্কার করে বোর্দপেষ্ট লাগালে এ রোগ প্রতিকার করা যায়।
২) ফ্লোরাল ম্যালফরমেশনের ক্ষেত্রে মুকুলের ৭৫% শাখা প্রশাখা পাতলা করে দিলে আক্রান্ত মুকুলে ফল ধারণ করে । দমনের জন্য আক্রান্ত মুকুল কেটে পুড়িয়ে ধ্বংস করতে হবে। সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর মাসে গাছে জিংক দ্রবন স্প্রে করলে ফ্লোরাল ম্যালফরমেশন প্রতিরোধ করা যায়।
এ রোগ গাছের মুকুল ও ডালে দেখা যায়। ডালে হলে একে বলে অংগজ ম্যালফরমেশন এবং ফুলে হলে বলা হয় ফ্লোরাল ম্যালফরমেশন । আক্রান্ত ডালের বৃদ্ধি কমে যায় এবং আক্রান্ত মুকুলে ফল ধারণ করে না।
প্রতিকারঃ
১) কান্ডের অঙ্গজ ম্যালফরমেশন পরিস্কার করে বোর্দপেষ্ট লাগালে এ রোগ প্রতিকার করা যায়।
২) ফ্লোরাল ম্যালফরমেশনের ক্ষেত্রে মুকুলের ৭৫% শাখা প্রশাখা পাতলা করে দিলে আক্রান্ত মুকুলে ফল ধারণ করে । দমনের জন্য আক্রান্ত মুকুল কেটে পুড়িয়ে ধ্বংস করতে হবে। সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর মাসে গাছে জিংক দ্রবন স্প্রে করলে ফ্লোরাল ম্যালফরমেশন প্রতিরোধ করা যায়।
লাল
মরিচা
রোগঃ
এতে পাতার উপর লাল লাল / ভ্যালভেট মোলায়েম দাগ দেখা যায়। ব্যাপক আক্রমণ হলে পুরো পত্র ফলকটি বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে।
এতে পাতার উপর লাল লাল / ভ্যালভেট মোলায়েম দাগ দেখা যায়। ব্যাপক আক্রমণ হলে পুরো পত্র ফলকটি বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে।
প্রতিকারঃ
১) বোর্দ মিক্সার (১ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম চুন এবং অপর ১ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম তুতে মিশিয়ে মিশ্রণটি একত্রিত করে বোর্দ মিক্সার তৈরী করতে হয়, এক্ষেত্রে মিশ্রণ গুলো মাটি অথবা প্লাস্টিক পাত্রে করতে হবে।) ১৫ দিন পর পর ২/৩ বার প্রয়োগ করলে এ রোগ প্রতিকার করা সম্ভব
১) বোর্দ মিক্সার (১ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম চুন এবং অপর ১ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম তুতে মিশিয়ে মিশ্রণটি একত্রিত করে বোর্দ মিক্সার তৈরী করতে হয়, এক্ষেত্রে মিশ্রণ গুলো মাটি অথবা প্লাস্টিক পাত্রে করতে হবে।) ১৫ দিন পর পর ২/৩ বার প্রয়োগ করলে এ রোগ প্রতিকার করা সম্ভব
@ পোকামাকড় দমন
@
আমের হপার পোকাঃ
এ পোকা অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চা বা নিম্ফ এবং পুর্ণ বয়স্ক অবস্থায় আম গাছের সকল অংশ থেকে রস শুষে খায়। বিশেষ করে নিম্ফ মুকুলের রস শুষে খায়। মুকুল কালো হয় এবং ঝরে যায়।
আমের হপার পোকাঃ
এ পোকা অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চা বা নিম্ফ এবং পুর্ণ বয়স্ক অবস্থায় আম গাছের সকল অংশ থেকে রস শুষে খায়। বিশেষ করে নিম্ফ মুকুলের রস শুষে খায়। মুকুল কালো হয় এবং ঝরে যায়।
প্রতিকারঃ
রিপকর্ড / সিমবুস প্রতিলিটার পানিতে ১ মিঃ লিঃ হারে মিশিয়ে ফুল আসার ১০ দিনের মধ্যে ১ম বার (গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে) এবং গাছে আম মটর দানার মত হলে ২য় বার স্প্রে করে এ পোকা দমন করা যায়।
রিপকর্ড / সিমবুস প্রতিলিটার পানিতে ১ মিঃ লিঃ হারে মিশিয়ে ফুল আসার ১০ দিনের মধ্যে ১ম বার (গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে) এবং গাছে আম মটর দানার মত হলে ২য় বার স্প্রে করে এ পোকা দমন করা যায়।
আমের
পাতা
কাটা
উইংভিলঃ
স্ত্রী পোকা আমের কটি পাতার নিচে মধ্য শিরা বরাবর ডিম পাড়ে। এবং পাতা গুলো বোটার কাছকাছি কেটে মাটিতে ফেলে দেয়। এতে গাছের বৃদ্ধি মারত্মক ভাবে ব্যহত হয়।
স্ত্রী পোকা আমের কটি পাতার নিচে মধ্য শিরা বরাবর ডিম পাড়ে। এবং পাতা গুলো বোটার কাছকাছি কেটে মাটিতে ফেলে দেয়। এতে গাছের বৃদ্ধি মারত্মক ভাবে ব্যহত হয়।
প্রতিকারঃ
১) গাছের নিচের কাট পাতাগুলো সংগ্রহ করে পুড়িয়ে / মাটিতে পুতে ধ্বংস করতে হবে।
২) প্রয়োজনে গাছে কচি পাতা দেখা দিলে সুমিথিয়ন ৫০ ইসি / ডায়াজিনন ৬০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মিঃলিঃ হারে মিশিয়ে স্প্রে করলে এ পোকা দমন করা যায়।
১) গাছের নিচের কাট পাতাগুলো সংগ্রহ করে পুড়িয়ে / মাটিতে পুতে ধ্বংস করতে হবে।
২) প্রয়োজনে গাছে কচি পাতা দেখা দিলে সুমিথিয়ন ৫০ ইসি / ডায়াজিনন ৬০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মিঃলিঃ হারে মিশিয়ে স্প্রে করলে এ পোকা দমন করা যায়।
আমের
মাছি
পোকাঃ
আম পাকার প্রায় ১ মাস আগে স্ত্রী পোকা অভিপজিটর দিয়ে ছিদ্র করে আমের ভিতরে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে কীড়া বা ম্যাগট বের হয় এবং আমের ভিতর বড় হতে থাকে। পাকা আম কাটলে ভিতবে কীড়া দেখা যায়। আম খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।
আম পাকার প্রায় ১ মাস আগে স্ত্রী পোকা অভিপজিটর দিয়ে ছিদ্র করে আমের ভিতরে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে কীড়া বা ম্যাগট বের হয় এবং আমের ভিতর বড় হতে থাকে। পাকা আম কাটলে ভিতবে কীড়া দেখা যায়। আম খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।
প্রতিকারঃ
১) পোকা আক্রান্ত ফল সংগ্রহ ও নষ্ট করে দমন করা যায়।
২) বিষটোপ ফাঁদ দিয়ে দমন করা যায়। বিষটোপ প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমের সাথে ১ গ্রাম ডিপ্টারেক্স-৮০ এসপি মিশিয়ে তৈরী করতে হয়।
৩) সেক্স ফেরোমন ইউজিনল ট্রাপ প্রয়োগ করে পুরুষ পোকা দমনের মাধ্যমেও এ পোকার আক্রমন প্রতিহত করা যায়। বাগানে ২০-২৫ মিটার পর পর এ ফাঁদ প্রয়োগ করতে হবে।
১) পোকা আক্রান্ত ফল সংগ্রহ ও নষ্ট করে দমন করা যায়।
২) বিষটোপ ফাঁদ দিয়ে দমন করা যায়। বিষটোপ প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমের সাথে ১ গ্রাম ডিপ্টারেক্স-৮০ এসপি মিশিয়ে তৈরী করতে হয়।
৩) সেক্স ফেরোমন ইউজিনল ট্রাপ প্রয়োগ করে পুরুষ পোকা দমনের মাধ্যমেও এ পোকার আক্রমন প্রতিহত করা যায়। বাগানে ২০-২৫ মিটার পর পর এ ফাঁদ প্রয়োগ করতে হবে।
ভোমরা
পোকাঃ
আমের ভোমরা পোকার কীড়া আমের গায়ে ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে শাঁস খায়। সাধারণত কচি আমে ছিদ্র করে এরা ভিতরে ঢুকে এবং ফল বড় হওয়ার সাথে সাথে ছিদ্রটি বন্ধ করে দেয়। এজন্য বাহির থেকে আমটি ভাল মনে হলেও ভিতরে কীড়া থেকে যায় এবং দিনে দিনে তা বড় হয়। পাকা আমে গায়ে ছিদ্র করে ভিতর থেকো কালো রংয়ের উইভিল পোকাটি বের হয়ে আসে। ফলের ভিতর আক্রান্ত অংশটি কালো হয়ে যায়, পোকার বিষ্টা দেখা যায় এবং আম খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।
আমের ভোমরা পোকার কীড়া আমের গায়ে ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে শাঁস খায়। সাধারণত কচি আমে ছিদ্র করে এরা ভিতরে ঢুকে এবং ফল বড় হওয়ার সাথে সাথে ছিদ্রটি বন্ধ করে দেয়। এজন্য বাহির থেকে আমটি ভাল মনে হলেও ভিতরে কীড়া থেকে যায় এবং দিনে দিনে তা বড় হয়। পাকা আমে গায়ে ছিদ্র করে ভিতর থেকো কালো রংয়ের উইভিল পোকাটি বের হয়ে আসে। ফলের ভিতর আক্রান্ত অংশটি কালো হয়ে যায়, পোকার বিষ্টা দেখা যায় এবং আম খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।
প্রতিকারঃ
১) আম গাছের মরা ও অতিরিক্ত পাতা শাখা প্রশাখা কেটে পরিস্কার করতে হবে।
২) গাছে ফল ধারণের ১ থেকে ২ সপ্তাহের পর হতে ডায়েজিনন – ৬০ ইসি, সুমিথিয়ন – ৫০ ইসি, লিবাসিড – ৫০ ইসি এর যে কোন একটি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি. লি. হারে মিশিয়ে ১৫ দিন অন্তর অন্তর ২বার স্প্রে করতে হবে।
১) আম গাছের মরা ও অতিরিক্ত পাতা শাখা প্রশাখা কেটে পরিস্কার করতে হবে।
২) গাছে ফল ধারণের ১ থেকে ২ সপ্তাহের পর হতে ডায়েজিনন – ৬০ ইসি, সুমিথিয়ন – ৫০ ইসি, লিবাসিড – ৫০ ইসি এর যে কোন একটি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি. লি. হারে মিশিয়ে ১৫ দিন অন্তর অন্তর ২বার স্প্রে করতে হবে।
আমের
পাতা
খেকো
বিছা
পোকা
/ ম্যাংগো ডি-ফলিয়েটরঃ
এ পোকা পাতার মধ্য শিরাটি অবশিষ্ট রেখে সম্পুর্ণ অংশ খেয়ে ফেলে। আক্রমণ ব্যাপক হলে গাছের কোন পাতা অবশিষ্ট থাকে না। খাদ্যের প্রয়োজনে পোকা এক গাছ হতে অন্য গাছে গমণ করে।
এ পোকা পাতার মধ্য শিরাটি অবশিষ্ট রেখে সম্পুর্ণ অংশ খেয়ে ফেলে। আক্রমণ ব্যাপক হলে গাছের কোন পাতা অবশিষ্ট থাকে না। খাদ্যের প্রয়োজনে পোকা এক গাছ হতে অন্য গাছে গমণ করে।
প্রতিকারঃ
১) কীড়া গুলো প্রাথমিক অবস্থায় দলবদ্ধ ভাবে পাতার নিচে অবস্থান করে । এ অবস্থায় এদের সংগ্রহ করে মেরে ফেলতে হবে।
২) কীড়ার গায়ে সুং গুলো পূর্ণতা প্রাপ্তির পূর্বে ডায়েজিনন – ৬০ ইসি, সুনিথিয়ন -৫০ ইসি, লিবাসিড – ৫০ ইসি এর যে কোন একটি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি. লি. হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
৩) ব্যাপক আক্রমণ হলে আগুনে পুড়িয়েও এ পোকা মারা যেতে পারে
১) কীড়া গুলো প্রাথমিক অবস্থায় দলবদ্ধ ভাবে পাতার নিচে অবস্থান করে । এ অবস্থায় এদের সংগ্রহ করে মেরে ফেলতে হবে।
২) কীড়ার গায়ে সুং গুলো পূর্ণতা প্রাপ্তির পূর্বে ডায়েজিনন – ৬০ ইসি, সুনিথিয়ন -৫০ ইসি, লিবাসিড – ৫০ ইসি এর যে কোন একটি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি. লি. হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
৩) ব্যাপক আক্রমণ হলে আগুনে পুড়িয়েও এ পোকা মারা যেতে পারে
@ সমস্যা ও
প্রতিকার @
আম গাছে এক বছর অনেক ফুল আসে, কিনা পরের বছর তেমন আসেনা। এ ধরনের সমস্যা অলটারনেট বেয়ারিং নামে সুপরিচিত। কোন কোন গাছে এক বছর ঠিকমত ফুল ধরে অথচ পরবর্তীতে ২/৩ ঠিকমত ফল ধরেন। এ ধরনের সমস্যাকে ইরিগুললার বেয়ারিং বলে। এ ধরনের সমস্যার মূল কারন সমন্ধে একেবারে নিশ্চিত হওয়া নাগেলেও বিভিন্ন অবস্থার সঙ্গে সম্পর্ক আছে তাতে সন্দেহ নেই। এগুলো নিন্মরূপঃ
ক) জাতের বৈশিষ্ট্যঃ কতগুলো আমের জাত আছে যে গুলোতে মোটামুটি কমবেশী প্রতিবছরই ফল দেয়। এগুলোর মধ্যে হিমসাগর, রানী পসন্দ, খুদীখিরসা অন্যতম। অথচ ল্যাংড়া, বোম্বাই ও খিরসাপাতিতে এ সমস্যা বেশী দেখা যায়।
খ) গাছের ও ডালের বয়সঃ ল্যাংড়া জাতের আম গাছ লাগানোর প্রথম ২০ বছর পর্যন্ত প্রা্য় প্রতি বছরই কমবেশী ফল ধরে অথচ বয়স বেড়ে গেলে এ গুন আর থাকেনা।
শীতকাল ছাড়া প্রায় সারা বছরই আম গাছে নতুন ডাল গজায়। তবে বসনতকালে এধরনের নতুন ডাল গজানোর প্রবণতা বেশী। আর এসময় গজানো ডালে সাধারনতঃ ফুল আসে। কেননা নতুন ডালের বয়স ১০ মাস হলে ফুল ধরার উপযোগী হয়।
গ) পাতাওয়ালা মুকুলঃ ফজলী জাতের আমে ও আরো কিছু কিছু জাতে নতুন পাতাসহ মুকুল বের হতে দেখা যায়। অথচ অন্য ক্ষেত্রে মুকুলে এ ধরনের কোন পাতা থাকেনা। যে সব গাছে পাতাসহ মুকুল
বের হয় সে গাছে প্রতি বছরই মোটামুটি ফল আসে।
ঘ) ডালের শর্করা ও নাইট্রোজেনের আনুপাতঃ কোন ডালে মুকুল আসতে হলে শর্করা ও নাইট্রোজেনের পরিমাণ যথেষ্ট থাকতে হবে, তবে শর্করার হার তুলনায় বেশী থাকা উচিত। অথচ এ হার যদি সমান হয় অথবা নাইট্রোজেনেরহার বেশী হয় তবে ডালে মুকুল না এসে পাতা গজাবার সম্ভবনা বেশী থাকে। পাতাওয়ালা মুকুলে পাতাগুলো শর্করা সংগ্রহে সমর্থ হয় বলে পরের বছরেও গাছে মুকুল আসে।
ঙ) হরমনের প্রভাবঃ বিজ্ঞানীরা মনে করেন কতগুলো হরমনের প্রভাবে গাছে মুকুল ধরতে সহায়ক হয়। কাজেই এ ধরনের হরমন স্প্রে করার ১০-১৫ দিন পরে গাছে ফুল আসে।
চ) আবহাওয়ার প্রভাব ও রোগ- পোকার উপদ্রবঃ গাছে ফুল আসার সময় আবহাওয়া মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলে পরাগায়নে ব্যাঘাত ঘটে। তার ফলে ফুল ঝরে যায়। তাছাড়া রোগ ও পোকার উপদ্রবে মুকুল আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়।
প্রতিকারঃ ফল না ধরার সমস্যার একক সমাধান না থাকলেও কতগুলো যৌথ ব্যবস্থার মাধ্যমে আম গাছে প্রতি বছর আম ফলানো সম্ভব।
১) যে সব জাতের আম প্রতি বছর ধরে সে জাতের কিছু কিছু আম গাছ বাগানে অবশ্যই লাগানো উচিত।
২) বর্ষার আগে, বর্ষার পরে এবং শীতকালে তিনবার বাগানে চাষ দেওয়া প্রয়োজন।
৩) প্রতি বছরই বর্ষার আগে ও পরে সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। যে বছর গাছে বেশী ফল দিবে সে বছর ফল সংগ্রহ করার পর পরই গাছ প্রতি অতিরিক্ত দেড় কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন, তাতে নতুন পাতা গজাতে সাহায্য করে।
৪) শীতকাল ছাড়া অন্য সময়ে রসের অভাবে গাছ যেন কষ্ট না পায় এজন্য নিয়মিত সেচ দিতে হবে।
৫) রোগ ও পোকামাকড় সময়মত দমন করতে হবে।
৬) গাছের পরগাছা এবং রোগাক্রান্ত হয়ে মরে যাওয়া ডাল অবশ্যই সময় মত ছেটে ফেলতে হবে।
৭) বাগানে মৌমাছি পালন ব্যবস্থা নিলে পরাগায়নে সহায়তা হয়।
৮) গাছ যদি খুব বেশী বাড়ে তবে আগষ্ট- সেপ্টেম্বর মাসে ২ সে: মি: গোল করে কিছু ডালের বাকল উঠিয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া গাছের বয়স অনুপাতে গোড়া কোপিয়ে ৩-৫ কেজি লবণ প্রয়োগ করে পানি দিলে সুফল পাওয়া যেতে পারে।
৯) মশুর দানার মত গাছে ফল ঝরতে দেখা গেলে প্ল্যানফিক্স নামক হরমোন ১০ লিটার পানিতে ২-৩ মি: লি: মিশিয়ে ২-৩ সপ্তাহ পর পর স্প্রে করলে ফল ঝরা বন্ধ হয়।
আম গাছে এক বছর অনেক ফুল আসে, কিনা পরের বছর তেমন আসেনা। এ ধরনের সমস্যা অলটারনেট বেয়ারিং নামে সুপরিচিত। কোন কোন গাছে এক বছর ঠিকমত ফুল ধরে অথচ পরবর্তীতে ২/৩ ঠিকমত ফল ধরেন। এ ধরনের সমস্যাকে ইরিগুললার বেয়ারিং বলে। এ ধরনের সমস্যার মূল কারন সমন্ধে একেবারে নিশ্চিত হওয়া নাগেলেও বিভিন্ন অবস্থার সঙ্গে সম্পর্ক আছে তাতে সন্দেহ নেই। এগুলো নিন্মরূপঃ
ক) জাতের বৈশিষ্ট্যঃ কতগুলো আমের জাত আছে যে গুলোতে মোটামুটি কমবেশী প্রতিবছরই ফল দেয়। এগুলোর মধ্যে হিমসাগর, রানী পসন্দ, খুদীখিরসা অন্যতম। অথচ ল্যাংড়া, বোম্বাই ও খিরসাপাতিতে এ সমস্যা বেশী দেখা যায়।
খ) গাছের ও ডালের বয়সঃ ল্যাংড়া জাতের আম গাছ লাগানোর প্রথম ২০ বছর পর্যন্ত প্রা্য় প্রতি বছরই কমবেশী ফল ধরে অথচ বয়স বেড়ে গেলে এ গুন আর থাকেনা।
শীতকাল ছাড়া প্রায় সারা বছরই আম গাছে নতুন ডাল গজায়। তবে বসনতকালে এধরনের নতুন ডাল গজানোর প্রবণতা বেশী। আর এসময় গজানো ডালে সাধারনতঃ ফুল আসে। কেননা নতুন ডালের বয়স ১০ মাস হলে ফুল ধরার উপযোগী হয়।
গ) পাতাওয়ালা মুকুলঃ ফজলী জাতের আমে ও আরো কিছু কিছু জাতে নতুন পাতাসহ মুকুল বের হতে দেখা যায়। অথচ অন্য ক্ষেত্রে মুকুলে এ ধরনের কোন পাতা থাকেনা। যে সব গাছে পাতাসহ মুকুল
বের হয় সে গাছে প্রতি বছরই মোটামুটি ফল আসে।
ঘ) ডালের শর্করা ও নাইট্রোজেনের আনুপাতঃ কোন ডালে মুকুল আসতে হলে শর্করা ও নাইট্রোজেনের পরিমাণ যথেষ্ট থাকতে হবে, তবে শর্করার হার তুলনায় বেশী থাকা উচিত। অথচ এ হার যদি সমান হয় অথবা নাইট্রোজেনেরহার বেশী হয় তবে ডালে মুকুল না এসে পাতা গজাবার সম্ভবনা বেশী থাকে। পাতাওয়ালা মুকুলে পাতাগুলো শর্করা সংগ্রহে সমর্থ হয় বলে পরের বছরেও গাছে মুকুল আসে।
ঙ) হরমনের প্রভাবঃ বিজ্ঞানীরা মনে করেন কতগুলো হরমনের প্রভাবে গাছে মুকুল ধরতে সহায়ক হয়। কাজেই এ ধরনের হরমন স্প্রে করার ১০-১৫ দিন পরে গাছে ফুল আসে।
চ) আবহাওয়ার প্রভাব ও রোগ- পোকার উপদ্রবঃ গাছে ফুল আসার সময় আবহাওয়া মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলে পরাগায়নে ব্যাঘাত ঘটে। তার ফলে ফুল ঝরে যায়। তাছাড়া রোগ ও পোকার উপদ্রবে মুকুল আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়।
প্রতিকারঃ ফল না ধরার সমস্যার একক সমাধান না থাকলেও কতগুলো যৌথ ব্যবস্থার মাধ্যমে আম গাছে প্রতি বছর আম ফলানো সম্ভব।
১) যে সব জাতের আম প্রতি বছর ধরে সে জাতের কিছু কিছু আম গাছ বাগানে অবশ্যই লাগানো উচিত।
২) বর্ষার আগে, বর্ষার পরে এবং শীতকালে তিনবার বাগানে চাষ দেওয়া প্রয়োজন।
৩) প্রতি বছরই বর্ষার আগে ও পরে সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। যে বছর গাছে বেশী ফল দিবে সে বছর ফল সংগ্রহ করার পর পরই গাছ প্রতি অতিরিক্ত দেড় কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন, তাতে নতুন পাতা গজাতে সাহায্য করে।
৪) শীতকাল ছাড়া অন্য সময়ে রসের অভাবে গাছ যেন কষ্ট না পায় এজন্য নিয়মিত সেচ দিতে হবে।
৫) রোগ ও পোকামাকড় সময়মত দমন করতে হবে।
৬) গাছের পরগাছা এবং রোগাক্রান্ত হয়ে মরে যাওয়া ডাল অবশ্যই সময় মত ছেটে ফেলতে হবে।
৭) বাগানে মৌমাছি পালন ব্যবস্থা নিলে পরাগায়নে সহায়তা হয়।
৮) গাছ যদি খুব বেশী বাড়ে তবে আগষ্ট- সেপ্টেম্বর মাসে ২ সে: মি: গোল করে কিছু ডালের বাকল উঠিয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া গাছের বয়স অনুপাতে গোড়া কোপিয়ে ৩-৫ কেজি লবণ প্রয়োগ করে পানি দিলে সুফল পাওয়া যেতে পারে।
৯) মশুর দানার মত গাছে ফল ঝরতে দেখা গেলে প্ল্যানফিক্স নামক হরমোন ১০ লিটার পানিতে ২-৩ মি: লি: মিশিয়ে ২-৩ সপ্তাহ পর পর স্প্রে করলে ফল ঝরা বন্ধ হয়।
আম
গাছে
প্রচুর
মুকুল
আসলেও
ফল
না
ধরার
কারণ
ও
তার
সমাধান
আম গাছে প্রচুর মুকুল দেখা দিলেও আম ধরে না বা খুব কম ধরে, যা একটি গুরুতর সমস্যা। এর অনেক কারণ থাকতে পারে। প্রথমত: শোষক বা হপার পোকার উপদ্রবের জন্য এটি হতে পারে। ফুল আসার পর পূর্ণাঙ্গ শোষক পোকা ও তার নিম্ফগুলো ফুলের রস টেনে নেয়। ফলে সমস- ফুলগুলো একসময় শুকিয়ে ঝরে যায়। একটি হপার পোকা দৈনিক তার দেহের ওজনের ২০ গুণ পরিমাণ রস শোষণ করে খায় এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত আঠালো রস মলদ্বার দিয়ে বের করে দেয়, যা মধুরস নামে পরিচিত। এ মধুরস মুকুলের ফুল ও গাছের পাতায় জমা হতে থাকে যার ওপর এক প্রকার ছত্রাক জন্মায়। প্রতিকার হিসাবে আম বাগান সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে বিশেষ করে গাছের ডালপালা যদি খুব ঘন থাকে তবে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ছাঁটাই করতে হবে, যাতে গাছের মধ্যে প্রচুর আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে। আমের মুকুল যখন ৮/১০ সেন্টিমিটার লম্বা হয় তখন একবার এবং আম মটর দানার মতো হলে আর একবার প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে সাইপারমেথ্রিন অথবা কার্বারিল ২ গ্রাম/লিটার মিশিয়ে সম্পূর্ণ গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের হপার পোকার কারণে সুটিমোল্ড রোগের আক্রমণ অনেক সময় ঘটে, তাই সুটিমোল্ড দমনের জন্য প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে সালফার জাতীয় ওষুধ ব্যবহার্য কীটনাশকের সাথে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। দ্বিতীয়ত: মেঘলা আকাশ ও কুয়াশা থাকার কারণে মুকুলে পাউডারি মিলডিউ রোগ দেখা দেয়। ফলে অতি দ্রুত মুকুলের গায়ে সাদা সাদা পাউডারের মতো দেখা দেয় এবং একপর্যায়ে প্রায় সব মুকুল কালো হয়ে ঝরে যায়। সালফারঘটিত ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম ভালভাবে মিশিয়ে স্প্রে করে তা দমন করা যায়। তাছাড়া এ্যানথ্রাকনোজও এ সময় দেখা দেয়। ফলে সমস্যা মুকুল কালো হয়ে ঝরে পড়ে। এক্ষেত্রে ম্যানকোজেব প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে স্প করতে হবে। তৃতীয়ত: গবেষণায় দেখা গেছে, আবহাওয়া, পোকা-মাকড় ও রোগ কোন কারণে এটি ঘটে না। আমের পুষ্পমঞ্জরিতে এক লিঙ্গ ও উভলিঙ্গ ফুল এক সঙ্গে থাকে। ভালো ফলনের জন্য বেশি বেশি উভলিঙ্গ ফুলের দরকার। কিনা যে সব গাছে ১০ শতাংশের কম উভলিঙ্গ ফুল থাকে তারা স্বভাবত:ই স্বল্প ফলনশীল জাত। কাজেই ভালো ফলন পেতে হলে এসব জাতের আম চাষ না করাই ভাল। চতুর্থত: গাছে ফুল ফোটার সময় কুয়াশা, মেঘলা আবহাওয়া বা বৃষ্টি থাকলে ফুলের পরাগ-সংযোগ ব্যাহত হয়। যার ফলে প্রচুর ফুল ফুটলেও সময় মতো পরাগ সংযোগ না হওয়ায় সেগুলো ঝরে যায় বা ফলন হয় না। তাছাড়া অনেক সময় গাছে অস্বাভাবিক পুষ্পমঞ্জরি দেখা যায়। এমন মুকুলে স্ত্রী ফুলের সংখ্যা খুব কম। ফলে কদাচিৎ ফল উৎপন্ন হয় এবং শেষ পর্যন্ত সেটি টিকে থাকে না। মুকুল ক্রমেই শুকিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গাছে থেকে যায়। এমন অবস্থায় আক্রান্ত মুকুল গাছ থেকে কেটে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা উচিত। আবার জমিতে ফসফেট, দস্তা ইত্যাদি খাদ্যের অভাব, ফল ধরার পর জমিতে রসের অভাব, ইত্যাদি কারণেও অসময়ে ফুল ও ফল ঝরে যায়। এ কারণেগুলো নিয়ন্ত্রণ করেও যদি ফল ঝরতে দেখা যায়, তাহলে “প্লানোফিক্স’ ২ মিলি ৪.৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে আম ফলের গুটি মটর দানার মতো হলে একবার আর মার্বেল আকৃতির হলে আর একবার স্প্রে করলে ফল ঝরা বন্ধ হবে।
আম গাছে প্রচুর মুকুল দেখা দিলেও আম ধরে না বা খুব কম ধরে, যা একটি গুরুতর সমস্যা। এর অনেক কারণ থাকতে পারে। প্রথমত: শোষক বা হপার পোকার উপদ্রবের জন্য এটি হতে পারে। ফুল আসার পর পূর্ণাঙ্গ শোষক পোকা ও তার নিম্ফগুলো ফুলের রস টেনে নেয়। ফলে সমস- ফুলগুলো একসময় শুকিয়ে ঝরে যায়। একটি হপার পোকা দৈনিক তার দেহের ওজনের ২০ গুণ পরিমাণ রস শোষণ করে খায় এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত আঠালো রস মলদ্বার দিয়ে বের করে দেয়, যা মধুরস নামে পরিচিত। এ মধুরস মুকুলের ফুল ও গাছের পাতায় জমা হতে থাকে যার ওপর এক প্রকার ছত্রাক জন্মায়। প্রতিকার হিসাবে আম বাগান সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে বিশেষ করে গাছের ডালপালা যদি খুব ঘন থাকে তবে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ছাঁটাই করতে হবে, যাতে গাছের মধ্যে প্রচুর আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে। আমের মুকুল যখন ৮/১০ সেন্টিমিটার লম্বা হয় তখন একবার এবং আম মটর দানার মতো হলে আর একবার প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে সাইপারমেথ্রিন অথবা কার্বারিল ২ গ্রাম/লিটার মিশিয়ে সম্পূর্ণ গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের হপার পোকার কারণে সুটিমোল্ড রোগের আক্রমণ অনেক সময় ঘটে, তাই সুটিমোল্ড দমনের জন্য প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে সালফার জাতীয় ওষুধ ব্যবহার্য কীটনাশকের সাথে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। দ্বিতীয়ত: মেঘলা আকাশ ও কুয়াশা থাকার কারণে মুকুলে পাউডারি মিলডিউ রোগ দেখা দেয়। ফলে অতি দ্রুত মুকুলের গায়ে সাদা সাদা পাউডারের মতো দেখা দেয় এবং একপর্যায়ে প্রায় সব মুকুল কালো হয়ে ঝরে যায়। সালফারঘটিত ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম ভালভাবে মিশিয়ে স্প্রে করে তা দমন করা যায়। তাছাড়া এ্যানথ্রাকনোজও এ সময় দেখা দেয়। ফলে সমস্যা মুকুল কালো হয়ে ঝরে পড়ে। এক্ষেত্রে ম্যানকোজেব প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে স্প করতে হবে। তৃতীয়ত: গবেষণায় দেখা গেছে, আবহাওয়া, পোকা-মাকড় ও রোগ কোন কারণে এটি ঘটে না। আমের পুষ্পমঞ্জরিতে এক লিঙ্গ ও উভলিঙ্গ ফুল এক সঙ্গে থাকে। ভালো ফলনের জন্য বেশি বেশি উভলিঙ্গ ফুলের দরকার। কিনা যে সব গাছে ১০ শতাংশের কম উভলিঙ্গ ফুল থাকে তারা স্বভাবত:ই স্বল্প ফলনশীল জাত। কাজেই ভালো ফলন পেতে হলে এসব জাতের আম চাষ না করাই ভাল। চতুর্থত: গাছে ফুল ফোটার সময় কুয়াশা, মেঘলা আবহাওয়া বা বৃষ্টি থাকলে ফুলের পরাগ-সংযোগ ব্যাহত হয়। যার ফলে প্রচুর ফুল ফুটলেও সময় মতো পরাগ সংযোগ না হওয়ায় সেগুলো ঝরে যায় বা ফলন হয় না। তাছাড়া অনেক সময় গাছে অস্বাভাবিক পুষ্পমঞ্জরি দেখা যায়। এমন মুকুলে স্ত্রী ফুলের সংখ্যা খুব কম। ফলে কদাচিৎ ফল উৎপন্ন হয় এবং শেষ পর্যন্ত সেটি টিকে থাকে না। মুকুল ক্রমেই শুকিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গাছে থেকে যায়। এমন অবস্থায় আক্রান্ত মুকুল গাছ থেকে কেটে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা উচিত। আবার জমিতে ফসফেট, দস্তা ইত্যাদি খাদ্যের অভাব, ফল ধরার পর জমিতে রসের অভাব, ইত্যাদি কারণেও অসময়ে ফুল ও ফল ঝরে যায়। এ কারণেগুলো নিয়ন্ত্রণ করেও যদি ফল ঝরতে দেখা যায়, তাহলে “প্লানোফিক্স’ ২ মিলি ৪.৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে আম ফলের গুটি মটর দানার মতো হলে একবার আর মার্বেল আকৃতির হলে আর একবার স্প্রে করলে ফল ঝরা বন্ধ হবে।
No comments:
Post a Comment