চিচিংগা

@ পরিচিতি @
বাংলা নামঃ চিচিংগা
ইংরেজী নামঃ Snake gourd
বৈজ্ঞানিক নামঃ Trichosanthes anguina
পরিবারঃ Cucurbitaceae
চিচিংগা একটি গ্রীষ্মকালীন উপাদেয় সবজি। ঝিংগায় প্রচুর পরিমান ক্যারোটিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। চিচিংগা কৈডা নামেও পরিচিত। এটি বাংলাদেশের প্রায় সকল অঞ্চলেই চাষ করা হয়
@ জাত @
জাতঃ
এটা হালকা সবুজ ও গাঢ় সবুজ (সাদা ডোরা কাটা) উভয় ধরনের হয়ে থাকে। ইদানিং বিভিন্ন বীজ কোম্পানী কর্তিক বাজারজাতকৃত চিচিঙ্গার জাত বের হয়েছে। সেগুলো হলঃ
নামধারী মালিক সীডস্‌ (প্রাঃ) লিমিটেড।
চিচিঙ্গা “গ্রীন লং”
একটি উচ্চ ফলনশীল জাত। বপনের সময় মাঘ – চৈত্র, ফসল সংগ্রহকাল ৫৫ হতে ৬০ দিন । চিচিঙ্গার রং গাঢ় সবুজের মাঝে সাদা রেখা। গড় ওজন ২৫০-৩৫০ গ্রাম এবং দৈর্ঘ্য ১৮ হতে ২০ ইঞ্চি। ভাইরাস, ডাউনি মিলডিউ রোগ সহনশীল এবং বৃষ্টি সহনশীল। ফলন একর প্রতি ১৫-১৮ টন/হেক্টর।
উফশী চিচিঙ্গা “সাথী”
বপনের সময় মাঘ – চৈত্র, ফসল সংগ্রহকাল ৫৫ হতে ৬০ দিন । এ জাতের চিচিঙ্গার রং গাঢ় সবুজের মাঝে সাদা রেখা। গড় ওজন ২৫০-৩৫০ গ্রাম এবং দৈর্ঘ্য ১৮ হতে ২০ ইঞ্চি। ভাইরাস, ডাউনি মিলডিউ রোগ সহনশীল এবং বৃষ্টি সহনশীল। ফলন একর প্রতি ১৫-১৮ টন/হেক্টর।
ইস্পাহানী সীডস
সুরমা গ্রীন
একটি উচ্চ ফলনশীল জাত। এর ফল মধ্যম আকৃতির ও সোজা, ৪০ থেকে ৪৫ সেমিঃ লম্বা ও প্রতি চিচিঙ্গার ওজন ১৫০-২০০ গ্রাম। ফাল্গুন মাস হতে ভাদ্র মাস পর্যন্ত বপন করা যায়। বপনের ৪০-৪৫ দিন পর চিচিঙ্গা সংগ্রহ করা যায়। একর প্রতি ফলন ৬-৮ টন।
লালতীর সীড লিমিটেড
সুরমা এফ – ১
দ্রুত বর্ধনশীল একটি হাইব্রিড জাত। আকর্ষনীয় হালকা সবুজ বর্ণের, চিচিঙ্গার মধ্যে সাদা ডোরাকাটা দাগ আছে। এটি ৩০-৩৫ সেমিঃ লম্বা এবং চিচিঙ্গার ওজন ২০০-৩০০ গ্রাম।
তিস্তা
উচ্চ ফলনশীল জাত। সবুজ বর্ণের, সাদা ডোরাকাটা দাগযুক্ত ও আকর্ষনীয়। এটি ৫০-৫৫ সেমিঃ লম্বা এবং ওজন ২৫০-৩০০ গ্রাম।
ঢাকা গ্রীন
উচ্চ ফলনশীল জাত। চিচিঙ্গা মধ্যম আকৃতির এবং সোজা। প্রতিটি চিচিঙ্গা ৪০-৪৫ সেমিঃ লম্বা এবং গড় ওজন ১৮০-২০০ গ্রাম।
তুরাগ
উচ্চ ফলনশীল জাত। চিচিঙ্গা মধ্যম থেকে ছোট আকৃতির এবং সোজা। প্রতিটি চিচিঙ্গা ৩০-৩৫ সেমিঃ লম্বা এবং গড় ওজন ১৬০-১৭০ গ্রাম।
বেজো শীতল সীড্‌স (বাংলাদেশ) লিমিটেড
হাইব্রিড চিচিঙ্গা BSS – 694
চিচিঙ্গার দৈর্ঘ্য ৩৫-৪০ সেমিঃ এবং ব্যাস ৪.৫ সেমিঃ। এর রং সাদাটে সবুজ, মধ্যে সাদা ডোরাকাটা এবং ওজন ১৫০-২০০ গ্রাম। মাত্র ৫০-৫৫ দিন পর ফসল সংগ্রহ করা যায়। এটি দূরে পরিবহনের উপযোগী।
@ মাটি ও জমি তৈরি @
মাটি
প্রায় সব ধরনের মাটিতেই ঝিংগা জন্মে। তবে বেলে দো-আঁশ ও দো-আঁশ মাটিতে এর চাষ ভাল হয়।
@জমি তৈরি@
বীজ বপনের জন্য ৪-৫টি চাষ ও মই দিয়ে ভালভাবে জমি তৈরি ও জমি আগাছা মুক্ত করতে হয়।
@ বীজ বপনের সময় @
ফাল্গুন-বৈশাখ পর্যন্ত বীজ বোনা যায়।
@ বীজের হার @
প্রতি শতকে ১০ গ্রাম, একরপ্রতি ১ কেজি, হেক্টরপ্রতি ২.৫ কেজি হারে বীজ বপন করতে হয়।
@ বীজ বপনের দূরত্ব @
দু’ মিটার দূরে দূরে ৭৫ সেঃ মিঃ বা ২.৫০ ফুট চওড়া ও ৬০ সেঃ মিঃ বা ২ ফুট গভীর গর্ত তৈরি করতে হবে।
@ সারের পরিমান @
সারের নাম প্রতি শতকে একরপ্রতি হেক্টরপ্রতি
গোবর ২০ কেজি ২ টন ৫টন
ইউরিয়া ৫০০ গ্রাম ৫০ কেজি ১২৫ কেজি
টিএসপি ৩২০ কেজি ৩২ কেজি ৮০ কেজি
মিউরেট অব পটাশ ২৫০ কেজি ২৫ কেজি ৬০ কেজি
জিপসাম ৩২০ কেজি ৩২ কেজি ৮০ কেজি
জিংক অক্সাইউ ১৬ কেজি ১.৬ কেজি
@ সার প্রয়োগ @
সম্পূর্ণ গোবর ও অর্ধেক টিএসপি ও মিউরেট অব পটাশ জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। বাকী টিএসপি ও মিউরেট অব পটাশ,সম্পূর্ণ জিপসাম ও জিংক অক্সাইড ও অর্ধেক ইউরিয়া মাদার গর্তের মাটির সাথে মিশাতে হবে। বাকী অর্ধেক ইউরিয়া চারার বয়স ৪০-৫০ দিন হলে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
@ পরিচর্যা @
গাছে বাউনি দিতে হয় ও মাচা তৈরি করতে হয়। বর্ষার পানি নিকাশের ব্যবস্থা করতে হয়।
@ সেচ ও নিকাশ @
শুকনা মৌসুমে মাঝে মাঝে পানি দিতে হবে এবং গাছের গোড়ায় পানি জমে গেলে তা নিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে।
@ ফসল সংগ্রহ ও ফলন @
ফসল সংগ্রহ
দু’মাস পর থেকে ফল পাওয়া যায়। চিচিংগা কচি অবস্থায় তুলতে হয়।
ফলন
প্রতি শতকে ৪০-৫০ কেজি, একরপ্রতি ৪-৫ টন, হেক্টরপ্রতি ১০-১২.৫ টন।