উদ্যান জাতীয় ফসল

Tuesday, January 26, 2016

ফুলকপি



@ ভূমিকা @
ইংরেজী নামঃ Cauliflower
বৈজ্ঞানিক নামঃ Brassica oleracea var. botrytis
পরিবারঃ Cruciferae
ফুলকপি বাংলাদেশে একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় শীতকালীন পুষ্টিকর my¯^vay সবজি। দেশের প্রায় সর্বত্র ফুলকপির চাষ হয়। তবে টাঙ্গাইল জেলা আগাম জাতের ফুলকপি চাষের জন্য বিখ্যাত
@ জাত @
আগাম জাতঃ কার্তিকা, পাটনাই, আগাম স্নোবল, ট্রপিক্যাল, বসন্ত, অগ্রহায়ণী, বারি ফুলকপি-, কেএস-৬০, সুপ্রীম সীডের সামার ডায়মন্ড, ব্র্যাক-৮০, লালতীরের তাব্বি এফ, নামধারী মালিক সীডের আর্লী
এ্যাটার্কশন,মালিক সীডের আর্লী হোয়াইট, ইত্যাদি।
মাঝারি জাতঃ পৌষালী, স্নোবল ওয়াই, স্নোবল-১৬, হোয়াইট বিউটি, লালতীরের সিভান এফ-, সুপ্রীম সীড কোম্পানীর স্নো ডায়মন্ড এবং বারি ফুলকপি- (রূপা) ইত্যাদি।
নাবি জাতঃ হোয়াইট মাউন্টেন, ইউনিক স্নোবল, মাঘী, রাক্ষুসী ইত্যাদি।
@ জাতের বৈশিষ্ট্য @
বারি ফুলকপি- (রূপা)
মাঝারী আগাম জাত। প্রতিটি ফুলকপির গড় ওজন ৮৫০-১০০০ গ্রাম। সংগ্রহের সময় কপি মজবুত হালকা ক্রীম বংয়ের হয়।
জাতটি বীজ বপনের ৯৫-১০৫ দিনের মধ্যে কপি খাওয়ার উপযুক্ত হয়। জাতটি দেশের সর্বত্র উৎপাদন করা সম্ভব। ফলন ২৫-২৮
টন/হেক্টর।
বারি ফুলকপি-
মাঝারী আগাম জাত। প্রতিটি ফুলকপির গড় ওজন ৭০৫-৮০০ গ্রাম। সংগ্রহের সময় কপি মজবুত সাদাটে ক্রীম বংয়ের হয়।
জাতটি বীজ বপনের ৮৫ দিনের মধ্যে কপি খাওয়ার উপযুক্ত হয়। জাতটি দেশের সর্বত্র বীজ উৎপাদন করতে পারে। ফলন ২৫
টন/হেক্টর।
কে এস-৬০ঃ
আগষ্ট – †m‡Þ¤^i মাস রোপণের উপযুক্ত সময়। চারা রোপণের ৬০ দিন পর ফুলকপি সংগ্রহ করা যায়। জাতের ফুলকপির সকল
কার্ডেও আকার আকৃতি একই ধরন। কার্ড ভিতরের পাতা দ্বারা ঢাকা থাকে। কপির পাতা খাড়া সতেজ থাকে। জাতটি কালো পচা
গোড়া পচা রোগ সহনশীল। প্রতিটি কপির গড় ওজন ৮০০-৯০০গ্রাম। হেক্টও প্রতি ফলন-৩৫-৪৫ টন।
ব্র্যাক-৮০ঃ
আগষ্ট – †m‡Þ¤^i মাস রোপণের উপযুক্ত সময়। চারা রোপণের ৬০-৬৫ দিন পর ফুলকপি সংগ্রহ করা যায়। জাতের ফুলকপির
সকল কার্ড ধবধবে সাদা, দেখতে আকর্ষনীয়, সবুজ পুরো চওড়া পাতা কপিকে ঘিরে রাখে। চ্যাপ্টা গোলাকার, কপি ঠাসা, দুরে
পরিবহনযোগ্য। প্রতিটি কপির গড় ওজন .-. কেজি। হেক্টও প্রতি ফলন-৩৫-৪৫ টন
@ মাটি জলবায়ু @
সাধারণত ঠান্ডা আর্দ্র জলবায়ু ফুলকপি চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। ফুলকপি জাতভেদে তাপমাত্রার বিভিন্নতায় খুবই সংবেদনশীল। তাই এর সফল চাষাবাদের জন্য সময়োপযোগী জাত নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণভাবে ফুলকপি ১৫-২২ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় সবচেয়ে ভাল জন্মে। বেলে দো-আঁশ এঁটেল দো-আঁশ মাটিতে ফুলকপি ভাল জন্মে। আগাম ফসলের জন্য দো-আঁশ এবং নাবী ফসলের জন্য এঁটেল দো-আঁশ ধরণের মাটি উত্তম। তবে জমিতে পানি সেচ পানি নিস্কাশনের ভাল ব্যবস্থা থাকতে হবে। ফুলকপি সফল চাষের জন্য মাটিতে যথেষ্ট জৈব সার থাকা দরকার এবং মাটির অম্লতা . তেকে . হলে ভাল হয়
@ জমি তৈরি @
গভীর চাষ দিয়ে, মাটির ঢেলা ভেঙ্গে, ভালভাবে আগাছা পরিষ্কার করে ফুলকপি চাষের জন্য জমি তৈরি করতে হয়।
বপন সময়
আগাম জাতের ফুলকপি চাষের জন্য আগস্টের মাঝামাঝি, মাঝারি জাতের জন্য †m‡Þ¤^i মাসের মাঝামাঝি নাবী জাতের জন্য অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বীজতলায় বীজ বপন করতে হবে। হেক্টরপ্রতি ফুলকপি চাষের জন্য ২০০-২৫০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়।
@ বীজতলা তৈরী চারা উৎপাদন @
আগাম জাতের বীজ বপনের পর বীজতলা যাতে ঠান্ডা থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বীজতলা ঠান্ডা রাখার জন্য গ্রীষ্ম বর্ষার সময় বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে। বীজতলা যাতে শুষ্ক না হয় সেজন্য সময় মত সেচ দিতে হবে। চারার গোড়াপঁচা রোগ প্রতিরোধের জন্য বীজতলার মাটি ফরমালডিহাইড দিয়ে শোধন করে নিতে হবে। প্রতি এক ভাগ ফরমালডিহাইড ৫০ ভাগ পানিতে দ্রবীভুত করে দ্রবন প্রস্তুত করতে হয়। চারা তৈরীর জন্য 3×1 মি. আকারের বীজতলা তৈরী করতে হবে। বীজ ঘন করে প্রাথমিক বীজতলায় বুনতে হয়। চারা গজানোর ১০-১২দিন পর ছোট ছোট চারাগুলো উঠিয়ে অন্য একটি বীজতলায় পাতলা করে লাগাতে হয়। এতে চারা সুস্থ সবল হয়। দ্বিতীয় বীজতলায় চারা স্থানান্তরের / দিন পূর্বে বীজতলা প্রতি ১৫০গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ১০০ গ্রাম এমপি সার প্রয়োগ করতে হবে। পরবর্তীতে চারার বাড়-বাড়তি কম হলে প্রতি বীঝ তলায় ৮০-১০০ গ্রাম ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
@ চারা রোপণ @
ফুলকপি চাষের জন্য ৩০-৩৫ দিন বয়সের চারা মাঠে লাগাতে হয়।০রোপণের সময় একটি সুস্থ-সবল চারায় -৬টি পাতা থাকবে। ভালভাবে পরিমিত সার প্রয়োগ করে জমি চাষ করতে হবে এবং চাষকৃত জমিতে মিটার চওড়া ১৫-২০ সে. মি. উঁচু বেড তৈরী করতে হবে। দুটো বেডের মাঝে ৩০ সেমি নালা থাকবে যা সেচ নিষকাশন কাজে ব্যবহৃত হবে। বেডে 60×45 সেমি দূরত্বে চারা রোপণ করতে হবে। রোপণের পূর্বে চারা উত্তেলনের সময় বীজতলার মাটি ভিজিয়ে নিতে হবে। সাবধানে চারা উঠিয়ে বিকেলে রোপণ করতে হবে। রোপনের পর পরই গাছের গোড়ায় পানি সেচ দিতে হবে। চারা রোপণের পর - দিন হালকা ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
@ সার প্রয়োগ @
ভাল ফলন পেতে হলে ফুলকপি চাষে হেক্টরপ্রতি নিম্নরূপ হারে সার প্রয়োগ করতে হবে।
সারের নাম * মোট পরিমাণ শেষ চাষের সময় প্রয়োগ চারা রোপণের পূর্বে গর্তে প্রয়োগ ১ম উপরি প্রয়োগ (রোপণের ১৫ দিন পর) ২য় উপরি প্রয়োগ (রোপণের ৩৫ দিন পর)
গোবর ১০ টন – –
ইউরিয়া ১৫০ কেজি – – ৭৫ ৭৫
টিএসপি ১৫০ কেজি ৭৫ ৭৫ – –
এমপি ১২০ কেজি – – ৬০ ৬০
জিগসাম ১০০ কেজি ১০০ – – –
বোরিক এসিড (বোরন) কেজি – – –
এমোনিয়াম মলিবডেট (মলিবডেনাম) কেজি – – –
@ অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা @
ফুলকপির জমিতে কখনও রসের অভাব হতে দেয়া উচিত নয় প্রয়োজন অনুযায়ী বেডের মধ্যবর্তী নালা দিয়ে ১০/১৫ দিন পর পর সমান ভাবে সেচ দিতে হবে। সেচ পরবর্তী সময়ে জমিতেজোআসার পর আগাছা দমন করলে এবং মাটির চটা ভেঙ্গে ঝুরঝুরা করে দিলে ফুলকপির ¯^vfvweK বৃদ্ধি হয়। ফুলকপির রঙ ধবধবে সাধা রাখার জন্য কচি অবস্থা থেকে চারদিকে পাতা বেঁধে ঢেকে দিতে হয়। অন্যথায় সুর্যালোকে উন্মোচিত থাকলে এর বর্ণ হলুদাভ হয়।
@ ফসল সংগ্রহ @
রোপণের পর গাছে যখন ১২-১৫টি পাতা বের হয় থখনই পুষ্পমঞ্জরী দেখা যায়। নাবি জাত সমূহে বা যে সমস্ত জাত দ্বি-বর্ষজীবি সে ক্ষেত্রে ২৫-৩০ পাতা বের হবার পর পুষ্পমঞ্জুরী দেখা যায়। জাতভেদে রোপণের ৪০-৪৫ দিন পর পুষ্পমঞ্জুরী দেখা যায় এবং ৮০-৮৫ দিন পর সংগ্রহের উপযুক্ত হয়। দ্বি-বর্ষজীবি নাবি জাত এর ক্ষেত্রে সময় আরও বেশী লাগে। ফুলকপির পুষ্পমঞ্জুরী একটি নির্দিষ্ট আকার লাভ করার পর দৃঢ় বা শক্ত থাকা অবস্থাতেই তা সংগ্রহ করতে হবে। গাছের মাথায় পুষ্পমঞ্জুরী দৃশ্যমান হওয়ার - সপ্তাহের মধ্যে সংগ্রহোপযোগী হয়। বীজ বপনের পর ফুলকপি সংগ্রহ করতে ৯০-১০০ দিন সময় লাগে।
@ ফলন @
হেক্টর প্রতি ফলন ২৫-৩৫ টন। নাবি জাতের ক্ষেত্রে ফলন আরো বেশী হয়।
@ পোকামাকড় রোগবালাই দমন @
লেদা পোকা গাছের কচি পাতা, ডগা কপি খেয়ে নষ্ট করে। কাটুই পোকা গাছের গোড়া কেটে গাছকে নষ্ট করে। ফুলকপির ঘোড়া পোকা কপির কার্ড আক্রমন করে, কার্ড খেয়ে এবং পোকার বিষ্টা দ্বারা নষ্ট করে খাওয়ার অযোগ্য করে ফেলে। সাদা মাছির আক্রমনে কপির পাতা নিস্তেজ, দুর্বল বিবর্ন হয়ে পড়ে। এসব পোকার আক্রমণ দেখা গেলে ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি বা রিপকর্ড ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি মিশিয়ে সেপ্র করতে হয়। সাদা মাছির জন্য ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম ডিটারজেন্ট পাউডার মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে। প্রয়োজনে উপরোক্ত সকল সেপ্র ১৫ দিন পর আবার করতে হবে। ফুলকপিতে যে সমস্ত রোগ হয় তার মধ্যে পাতার দাগ পড়া চারা ধ্বসা প্রধান। পাতার দাগ পড়া রোগে পাতায় বাদামী থেকে কালো রংয়ের গোলগোল দাগ পড়ে। চারা ধ্বসা রোগে চারার গোড়া পচে চারা মারা যায়। ফুলকপিতে পাতার দাগপড়ার রোগ দেখা দিলে রোভরাল ৫০ ডব্লিউ পি বা ডাইথেন এম ৪৫ নামক ছত্রাকনাশক ওষুধ .০০২% হারে গাছে সেপ্র করতে হয়। ফুলকপির চারা ধ্বসা রোগের জন্য ব্যাভিস্টিন ৫০ ডব্লিউ পি ৫০০ গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রয়ো
@ সার সংক্ষেপ @
মাটি বেলে দো-আঁশ এঁটেল দো-আঁশ
জাত আগাম জাত কার্তিকা, পাটনাই, আগাম স্নোবল, ট্রপিক্যাল, বসন্ত, অগ্রহায়ণী ইত্যাদি। মাঝারি জাত পৌষালী, স্নোবলএক্্র, স্নোবল ওয়াই, স্নোবল-১৬, হোয়াইট বিউটি এবং বারী ফুলকপি- (রূপা) ইত্যাদি।
নাবি জাত হোয়াইট মাউন্টেন, ইউনিক স্নোবল, মাঘী ইত্যাদি।
চারা উৎপাদনের সময় আগাম: মধ্য আগস্ট, মাঝারী: মধ্য †m‡Þ¤^i, নাবী: মধ্য অক্টোবর
রোপণ দূরত্ব 60×45 সে. মি.
চারা বয়স ৩০-৩৫ দিন বয়সের চারা
সার প্রয়োগ (হেক্টর প্রতি) গোবর : ১৫ টন, ইউরিয়া : ১৫০ কেজি, টিএসপি: ২০০ কেজি, এমপি: ১০০ কেজি, জিপসাম: ৫০ কেজি,০সোডিয়াম মলিবডেট কেজি বোরাক্্র কেজি জমি তৈরীর শেষ চাষে াদিতে হবে। এর পর চারা রোপণের ১০ দিন, ৩০ দিন ৫০ দিন পর প্রতিবারে হেক্টর প্রতি ইউরিয়া ৫০ কেজি এমপি ৫০ কেজি উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
পোকামাকড় রোগ বালাই দমন লেদা পোকা গাছের কচি পাতা, ডগা কপি খেয়ে নষ্ট করে। ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি বা রিপকর্ড লিটার পরিমাণ ১০০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে সেপ্র করতে হয়। ফুলকপিতে পাতার দাগপড়া রোগ দেখা দিলে রোভরাল ৫০ ডব্লিউ পি বা ডাইথেন এম ৪৫ নামক ছত্রাকনাশক ঔষধ .০২% হারে গাছেসেপ্র করতে হয়। চারা ধ্বসা রোগের জন্র ব্যাভিস্টিন ৫০ ডব্লিউ পি ৫০০ গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করে রোগ দমনে রাখা যায়।
সেচ ০০-১৫ দিন অন্তর
ফসল সংগ্রহ নির্দিষ্ট আকার লাভ করা এবং দৃঢ় শক্ত থাকা অবস্থায়। সাধারণত বীজ বপনের ৯০-১০০ দন পর।
ফলন ৫০-৬০ টন. হে. (বারী ফুলকপি-) এবং বীজের ফলন ৪৫০-৫৫০ কেজি/হে.

No comments:

Post a Comment