@পরিচিতি@
ফুলের নামঃ অলোকনন্দা
ইংরেজী নামঃ Allamanda
বৈজ্ঞানিক নামঃ Allamanda cathartica
পরিবারঃ Apocynaceae
এটি একটি লতা জাতীয় গাছ। উজ্জল হলুদ বর্ণের ফুল সারা গ্রীস্ম ও বর্ষাকাল ধরে ফুটে। এ ফুলের গড়ন অনেকটা কলকের মতো তবে আয়তনে কলকের চেয়ে বড়।
@জাত ও মৌসুম@
জাতঃ অ্যালামন্ডা স্কটী- এটি বামন জাতের। এর ফুলের আকার ছোট ও হলুদ পাপড়ির বাইরের দিকে লাল বর্ণের দাগ বিদ্যমান। অ্যালামন্ডা নেরিফোলিয়া- ফুলের বর্ণ কমলা বর্ণের দাগ বিশিষ্ট সোনালী। অ্যালামন্ডা ভাওলেসিয়া- এটি গুল্ম জাতীয় গাছ। এর ফুল হালকা ভায়োলেট বর্ণের হয় এবং আয়তনে ছোট ও খুব সুন্দর হয়। ফুর সংখ্যায় কম ফোটে।
উৎপাদন মৌসুমঃ জুন – আগষ্ট মাস
@জলবায়ু ও মাটি@
জলবায়ু- এ ফুলের জন্য বড় দিন, উষ্ণ আর্দ্র আবহাওয়া আবশ্যক। কিন্তু ক্রমাগত ও দীর্ঘকালীন বৃষ্টিপাতে এই ফুলের ক্ষতি হয়। সমভাবে ব্যাপ্ত ১০০-১২৫ সেমি. বৃষ্টিপাত ও ৩০-৩৫ ডিগ্রী সে: তাপমাত্রা এ ফুলের পক্ষে বিশেষ অনুকূল।
জমি ও মাটির প্রকৃতি- খোলা রোদ্রজ্জল জমিতে এ ফুলগাছ ভালো হয়। ছায়াযুক্ত স্যাঁতসেঁতে জায়গায় গাছ ভালো হয় না এবং ফুলের রংও ভালো হয় না। বেলে মাটি, এঁটেল মাটি ও কাদা মাটি এ ফুলচাষের পক্ষে বিশেষ উপযোগী নয়। দোঁআশ মাটিই এ ফুলের পক্ষে সবচেয়ে ভাল। বাগানে যদি এঁটেল মাটি থাকে, তবে ইহার সহিত উপযুক্ত মাত্রায় বালি ও পাতা-পচা সার মিশাইয়া দোঁআশ মাটিতে পরিণত করিয়া ফুলগাছ লাগাইতে হয়।
@বংশবিস্তার ও জমি তৈরী@
বংশবিস্তারঃ শাখা ও দাবা কলমের সাহায্যে এফুলের বংশবিস্তার করা হয়।
জমি তৈরিঃ এ ফুল চাষের জন্য উর্বর হালকা দোআঁশ মাটি, উচু, শুষ্ক ও সহজে জল নিস্কাশিত হয় এমন জমি নির্বাচনকরতে হবে। দক্ষিণ খোলা জমি এ ফুল চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী।
জমিতে লাঙ্গল দেওয়া বা কোপানোর সময় জমিতে পরিমাণমতো পাতাপচা সার, পচা গোবর সার, হাড়গুড়া বা সুপার ফসফেট সার প্রয়োগ করে জমির সাথে মিশাতে হবে। জমিকে উত্তমরুপে কর্ষণ করে মাটি ঝুরঝুরে ও নরম করতে হবে।
চারা রোপনঃ জুন – আগষ্ট মাসে শাখা বা দাবা কলমের চারা জমিতে রোপন করতে হবে।
@সার ও পরিচর্যা@
সার প্রয়োগঃ সুফলা সার ৪০-৫০ গ্রাম এবং খামারের সার ২-৩ কেজির মত লাগবে। চারা রোপনের পর ২০-২৫ দিনের মাথায় এই সার প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।
পানি সেচঃ ৫-৬ দিন সেচ দিলে গাছে ফুলের উৎপাদন বেশি হয়।
@রোগ ও পোকা দমন@
রোগঃ ভাইরাসঘটিত রোগ-এ গাছ মোজাইক রোগে আক্রান- হয়। আক্রান্ত গাছের পাতা হলদে-সবুজ হয় এবং গাছ বেঁটে হয়ে যায়। ক্রমে ক্রমে আক্রান্ত পাতা ও ডাঁটা কুঞ্চিত হয়ে বিকৃত হয়ে থাকে। আক্রান্ত গাছে ফুল হয়না।
প্রতিকার- ভাইরাসঘটিত রোগের কোন ঔষধ নাই। সুতরাং রোগাক্রান- গাছগুলি সঙ্গে সঙ্গে তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। জাবপোকা, থ্রিপস, জসিড ইত্যাদি পোকা দ্বারা রোগের বিস্তার হয়। তাই সুস্থ্য গাছে নিয়মিত পরিচর্যা করে যেতে হবে। অনুমোদিত কীট নাশক প্রয়োগ করে এইসব পোকা দমন করা যায়। টবে বা জমিতে চারা বসানোর সময় প্রতি গাছের গোড়ায় ৪/৫ গ্রাম হিসাবে থাইমেট-১০জি প্রয়োগ করলে, এইসব কীটশত্রুর উপদ্রব হয় না।
পোকাদমণঃ সবুজ মাছি, কাটুই পোকা, শুয়াপোকা, জাবপোকা, থ্রিপস, উঁই, লাল মাকড়সা ইত্যদি কীটশত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হয়। জাবপোকা, থ্রিপস, লাল মাকড়সা দমণের জন্য অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করুন।
No comments:
Post a Comment